• সোমবার, ৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪২৯

জাতীয়

আইসিএমএবির প্রাক-বাজেট আলোচনা

বৈদেশিক ঋণ পরিহার, আভ্যন্তরীণ উৎসে গুরুত্ব দেওয়ার তাগিদ

  • ''
  • প্রকাশিত ২৪ এপ্রিল ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক:

আসন্ন জাতীয় বাজেট ২০২৪-২৫ ব্যবসায়ীবান্ধব করার পাশাপাশি বাজেট বাস্তবায়নে বৈদেশিক ঋণ পরিহার করে আভ্যন্তরীণ উৎস্য হতে সম্পদ অর্জনে গুরুত্ব দিয়েছেন ব্যবসায়ী ও অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে ইনস্টিটিউট অব কস্ট এন্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) আয়োজিত ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের জাতীয় বাজেটের উপর এক আলোচনা সভায় ব্যবসায়ী ও অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা এ দাবি জানিয়েছেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়েশা খান বলেন, উন্নয়ন ও অগ্রগতি একটি চলমান প্রক্রিয়া। ২০০৩-২০১০ সালের তুলনায় জাতীয় বাজের বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে দেশ দারিদ্র মুক্ত, খাদ্য নিরাপত্তা, অবকাঠামোর উন্নয়ন, রাজম্ব আদায় বৃদ্ধি হয়েছে। বৈদেশির ঋণ ছাড়াই বড়বড় স্থাপনা তৈরি হচ্ছে। আগামী বাজেটে দেশের উন্নয়ন ও ব্যবসায়ী বান্ধব করার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হবে। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে আমরা বিভিন্ন স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। বাজটে আমরা বেশ কিছু কৌশলগত পরিবর্তন আনার জন্য কাজ করছি। ইতোমধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলো তাদের নিজস্ব সক্ষমতায় নিজেদের বাজেটও তৈরি করছে। তিনি আরো বলেন, বাজেট ঘাটতি ধারণযোগ্য পর্যায়ে রেখে মুল্যস্থিতি নিয়ন্ত্রণসহ সমষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশিলতা বজায় রাখা, মুদ্রা নীতির সফল বাস্তবায়নের করা হবে। জ¦ালানী তেলের মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারের জন্য সামঞ্জস্য রেখে অভ্যন্তরীণ বাজারে সমন্বয় করা হবে। সামজিক নিরাপত্তার আওতা বৃদ্ধি এবং নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য স্বল্প মূল্যে খাদ্য বিতরণ করা হবে। রাজম্ব খাতে পরিকল্পিতভাবে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা এবং কর আহরণের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী স্ট্রাটেজি প্রনয়ণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

মাগুরা গ্রুপের চেযারম্যান মোস্তফা কামাল মহিউদ্দিন বলেছেন, আমরা যারা ব্যবসা করি তাদের কিছু সমস্যা রয়েছে। সে সমস্যাগুলোর সমাধানের পথ জাতীয় বাজেটর থাকা প্রয়োজন। বর্তমান সরকার ম্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য কাজ করছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে শুরুতেই সরকারকে অর্থনৈতিক শক্ত ভিত্তির ওপরে দেশকে গড়ে তুলতে হবে। সব কিছু স্মার্ট করতে হবে। প্রাইভেট সেক্টরের ব্যবসায়ীদের গুরুত্ব দিতে হবে। এদের সুবিধা ও অসুবিধা তুলে ধরতে হবে। আমাদের ধর্মেও বলা হয়েছে, কোয়ামতের দিন প্রকৃত ব্যবসায়ীদের সর্বোচ্চ মর্যাদা দেওয়া হবে। আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা কোন পর্যায়ে আছে সেটি নির্ধারণ করে প্রয়োজনীয় সাপোর্ট দিতে হবে। ব্যবসায়ীদের পুঁজি সংগ্রহে ব্যাংকের লোন, পুঁজিবাজার এবং বন্ড ইত্যাদি ইস্যু থেকে টাকা সংগ্রহ স্বচ্ছ ও সহজলসাধ্য নয়। এই বিষয়গুলো ব্যবসায়ীক উন্নয়নের প্রতিবন্ধতকা তৈরি করছে।

তিনি আরো বলেন, ব্যবসায়ীদের এলসি খোলার জন্য বেশ সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। সব ব্যাংক আবার এলসি খুলছেও না। যে ব্যাংকগুলো এলসি খুলছে তারা তাদের জামানতের পরিমাণ বৃদ্ধি করেছে। আগে যেখানে ৫০ শতাংশ ছিল এখন বা বৃদ্ধি পেতে পেতে ১৫০ শাতাংশে উন্নিত হয়েছে। বেড়েছে ডলারের দাম ও ক্ষেত্র বিশেষে তা ১৪০ টাকাতেও গিয়ে ঠেকেছে। এছাড়াও রয়েছে অনৈতিক দাবিরও বিষয়। সকল দাবি মিটিয়ে ভ্যাট-ট্যাক্স দিয়ে আমরা যারা ছোট ব্যবসা করি তাদের ব্যবসা করা কঠিন হয়ে উঠেছে। নূন্যতম ৪০ শতাংশ লাভ করতে না পারলে ব্যবসায়ীরা টিকতে পারবে না। পরিশোধ করতে পারবে না ব্যাংকের লোনও। এ অবস্থায় ব্যবসায়ীদের দিকে সরকারকে নজর দিতে হবে। এছাড়াও রফতানি বৃদ্ধি, বৈদেশিক কর্মসংস্থাণে সরকারকে গুরুত্ব দিতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির চীফ এডভাইজর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, আমরা রাজস্ব আদায় করতে পারছি না। যেখানে ৯০ লাখ করদাতার কর দেওযার কথা থাকলেও মাত্র আমরা ৯ লাখের কাছ থেকে রাজম্ব পাচ্ছি। যারা রাজস্ব দিচ্ছে না তাদের কাছে আমাদের যেতে হবে। মুদ্রাস্ফিতি কমাতে সবাই ব্যাংকের সুদের হার কমাতে বলেন, কিন্তু শুধু সুদ কমিয়ে কোনো লাভ হবে না এ জন্য আমাদের সাপ্লাই বাড়াতে হবে।

আইসিএমএবির প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন এফসিএমএর সভাপতিত্ব এবং আইসিএমএবি'র প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট এবং বর্তমান কাউন্সিল সদস্য আরিফ খানের সঞ্চালনায় পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অফ বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ, মনসুর, এফবিসিসিআই এর প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও প্রাক বাজেট আলাচনায় অংশ নেন শিক্ষাবিদ, গবেষক, অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের সদস্যরা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads